বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব পালন করবেন ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার। গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার পদত্যাগ করায় রোববার (১১ আগস্ট) থেকেই তিনি গভর্নরের দায়িত্ব পালন করবেন।
আজ অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব আফসানা বিলকিসের সই করা এক অফিস আদেশে বাংলাদেশ ব্যাংককে বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের পদত্যাগজনিত কারণে ১১ আগস্ট থেকে নতুন গভর্নরের যোগ দেয়ার আগ পর্যন্ত দৈনন্দিন কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নররা স্ব স্ব ক্ষেত্রে তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম সম্পাদন করবেন।
অফিস আদেশে আরও বলা হয়, ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার গভর্নরের দৈনিক ডাক দেখবেন এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠাবেন।
এর আগে শুক্রবার (০৯ আগস্ট) ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান আব্দুর রউফ তালুকদার।
জানা যায়, গেল সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে যাননি গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। গভর্নরের পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, বিষয়টি তার জানা নেই।
নিয়ম অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর বা প্রধান উপদেষ্টার সম্মতিক্রমে গভর্নর নিয়োগ দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। সেই হিসেবে গভর্নরকে পদত্যাগও করতে হয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। আব্দুর রউফ তালুকদার তাই আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে তার পদত্যাগপত্র জমা দেন।
এদিকে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বুধবার (০৭ আগস্ট) একদল কর্মকর্তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, চার ডেপুটি গভর্নর, উপদেষ্টা ও আর্থিক গোয়েন্দা দপ্তরের প্রধানের পদত্যাগ দাবি করে মিছিল করেন। তখন একজন ডেপুটি গভর্নরকে সাদা কাগজে সই করতে বাধ্য করেন এবং আরও চারজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাকে ‘পদত্যাগে রাজি’ করান। যেসব শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাকে সাদা কাগজে সইয়ের মাধ্যমে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে বা যাদের পদত্যাগে রাজি করানো হয়েছে বলে বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা দাবি করেন, তারা সবাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১১ জুন গভর্নর হিসেবে চার বছর মেয়াদে নিয়োগ পান আব্দুর রউফ তালুকদার। ওই বছরের ১২ জুলাই তিনি গভর্নর হিসেবে যোগ দেন। এর আগে তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব ছিলেন। দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আগে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ব্যাপকভাবে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞার জেরে সাংবাদিকেরা গভর্নরের সব ধরনের অনুষ্ঠান বর্জন করে আসছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।