বারনামাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মালয়েশিয়ার সহায়তা চান প্রধান উপদেষ্টা

লালসবুজ ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৫, ০৪:৪১ পিএম

দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার করতে মালয়েশিয়ার আসিয়ান সভাপতির ভূমিকা কাজে লাগাতে চাইছে বাংলাদেশ। মালয়েশিয়ার সংবাদ সংস্থা বারনামাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

অতিসম্প্রতি মালয়েশিয়ায় ড. ইউনূসের সরকারি সফর শেষ হওয়ার আগে নেওয়া হয় সাক্ষাৎকারটি। এ সাক্ষাৎকার নেন বারনামার প্রধান সম্পাদক আরুল রাজু দুরার রাজ, ইন্টারন্যাশনাল নিউজ সার্ভিসের সম্পাদক ভুন মিয়াও পিং ও বারনামার ইকোনমিক নিউজ সার্ভিসের সহকারী সম্পাদক কিশো কুমারী সুশেদারাম।

সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার অভিজ্ঞতা এবং আসিয়ানে নেতৃত্বের অবস্থান বিস্তৃত আঞ্চলিক সমাধানের জন্য একটি অনন্য অবস্থানে নিয়ে গেছে মালয়েশিয়াকে। আমরা আশা করছি, মালয়েশিয়া এই সমস্যা সমাধানে সমগ্র আলোচনায় তার প্রভাব ফেলবে।’

মিয়ানমারের সংঘাতময় পরিস্থিতি ও শরণার্থী সংকটের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান সেনাবাহিনী এবং সরকারি বাহিনীর মধ্যে চলমান লড়াইয়ের ফলে শরণার্থী সংকট আরও গভীর হয়েছে। এ কারণে সীমান্ত পেরিয়ে নতুন করে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে।’

বাংলাদেশে ১২ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে। এর বাইরে আরও দেড় লাখ রোহিঙ্গা গত ১৮ মাসে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসেছে বলে জানান তিনি। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিস্থিতি ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। এবং সবচেয়ে খারাপ বিষয় হলো, তাদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সমস্ত তহবিল বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। তাই এটি আমাদের জন্য একটি বিশাল সমস্যা।’

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী মাসগুলোতে রোহিঙ্গাদের ওপর তিনটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আহ্বান করা হবে যাতে একটি টেকসই সমাধান খুঁজে বের করা যায়। প্রথমটি এই মাসের শেষে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় উচ্চ-স্তরের বৈঠকটি আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ফাঁকে অনুষ্ঠিত হবে এবং তৃতীয়টি বছরের শেষে কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত হবে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, সংকটময় পরিস্থিতি সৃষ্টির পর থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা খুব কম অগ্রগতি অর্জন করেছে। বিশেষ করে ২০২১ সাল থেকে মিয়ানমারে চলমান সশস্ত্র সংঘাতের কারণে এটি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। দীর্ঘস্থায়ী মানবিক সংকট কেবল বাংলাদেশকেই নয়, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং ইন্দোনেশিয়াসহ বেশ কয়েকটি আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্রকেও প্রভাবিত করছে বলেও উল্লেখ করেছে সংবাদ সংস্থাটি।

বারনামা জানিয়েছে, মালয়েশিয়া ১৯৫১ সালের জাতিসংঘ শরণার্থী কনভেনশন বা এর ১৯৬৭ সালের প্রোটোকলের স্বাক্ষরকারী না হলেও অস্থায়ীভাবে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে মানবিক ভিত্তিতে আশ্রয় দিচ্ছে।