গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির ভাগ্নীকে মহিমাগঞ্জ হাটের ইজারা নিয়ে দিলেন স্থানীয় বিএনপি

লালসবুজ ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৫, ০১:৪৪ পিএম

গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের চিত্রে যে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে, তা শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত দৃশ্যমান। কিন্তু পরিবর্তন হলেও, ক্ষমতার অপব্যবহার থেমে নেই। একদিকে যেমন আওয়ামী শাসনামলের আধিপত্য দূর হয়েছে, তেমনি আবার নতুন এক দুষ্টচক্র ক্ষমতার শূন্যস্থান পূরণের চেষ্টা করছে। এমনই একটি ঘটনা সম্প্রতি ঘটেছে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে, যেখানে স্থানীয় বিএনপি নেতারা ক্ষমতার লোভে একত্রিত হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার শুরু করেছে।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ প্রধানের আত্মীয় মাহমুদা বেগমকে মহিমাগঞ্জ হাটের ইজারা নিয়ে দিলেন উপজেলা বিএনপির সহায়তায় ও মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপি নেতারা। এসব নেতাদের মধ্যে অন্যতম গোবিন্দগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মজিদ প্রধান, গাইবান্ধা জেলা বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আবু সুফিয়ান সুজা, মহিমাগঞ্জ বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক, সবেক মেম্বার খাজাসহ বেশ কিছু স্থানীয় বিএনপি নেতা রয়েছেন।

ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ২১টি হাটের ইজারা আহ্বান করেছিল। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি, দরপত্র দাখিলকারীদের সামনে বাক্স খুলে সর্বোচ্চ দাতাগণের নাম ঘোষণা করা হয়। কিন্তু মহিমাগঞ্জ হাটের ইজারার বিষয়ে একাধিক বিতর্ক সৃষ্টি হয়। প্রথমত, মাহমুদা বেগম দরপত্র তুলে নেওয়ার পরও তার নামে ইজারা ঘোষণা করে উপজেলা প্রশাসন।

ঘটনা সুত্রপাত, ২৭ তারিখ উপজেলার হল রুমে ইউএনওর সভাপতিত্বে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ২১ টি হাটের
ইজারার জন্য দরপত্র খোলা হয়। মহিমাগঞ্জের দরপত্র খোলার আগেই মাহমুদা বেগম নামে একজন লিখিত ভাবে তার দরপত্র তুলে নেয়। ইউএনও বারবার বলার পরেও তিনি তার কথায় বহাল থেকে দরপত্র তুলে নেয়। পরবর্তীতে স্থানীয় বিএনপি নেতা সুজার পছন্দমত ব্যক্তি হাট না পাওয়ায় পুনরায় আওয়ামী লীগের সভাপতির ভাগ্নীকে হাটের ইজারা দেয় উপজেলা প্রশাসন। সুজা বিভিন্ন জায়গায় বলেছেন ইউএনও কে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেছি।

এদিকে, যখন দ্বিতীয় ব্যক্তি হাটের ইজারার জন্য নির্বাচিত হন, তখন তার পরিচিত কেউ না হওয়ায় বিএনপি নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন মাহমুদার শিডিউল বৈধ রাখতে। এ ব্যাপােরে উপজেলা প্রশাসনের ততক্ষণে কোনো সিদ্ধান্ত না এলেও, গোবিন্দগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি ও প্রেস ক্লাবের সভাপতি রবিউল ইসলাম মনুর চাপে মাহমুদাকেই ইজাদার হিসাবে ঘোষণা দেওয়া হয়।

সূত্র জানায়, ওইদিন হাটের ইজারা নিয়ে সুজার ক্যাডার বাহিনী গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি রনিকে শারীরিকভাবে আঘাত করে। পরে রনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে এ কথা জানান। পরে থানা বিএনপি বিষয়টি সমাধান করেন।

এদিকে, সুজা, সিদ্দিক ও খাজার ক্ষমতার অপব্যবহার ও আধিপত্য বিস্তারের ফলে মহিমাগঞ্জের স্থানীয় জনগণ বিএনপির নেতাদের উদ্দেশ্যে বলছেন, “এমন পরিবর্তন তো আমরা চাইনি, এর চেয়ে তো আওয়ামী লীগই ভালো ছিল।”