উত্তেজনার মধ্যেই সামরিক মহড়া চালাল পাকিস্তান, সীমান্তে বাড়ছে উদ্বেগ

ভারতের সঙ্গে বাড়তে থাকা আঞ্চলিক উত্তেজনার মধ্যেই বড় পরিসরে সামরিক মহড়া চালিয়েছে পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার (১ মে) অনুষ্ঠিত এই মহড়ায় অংশ নেয় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ও প্রযুক্তিনির্ভর কৌশলের মাধ্যমে তারা নিজেদের যুদ্ধ সক্ষমতার প্রদর্শন করে।
পাকিস্তানি গণমাধ্যম জিও নিউজ জানায়, সেনাবাহিনীর এই মহড়া ছিল পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ প্রস্তুতির অংশ। এতে অংশ নেওয়া সৈন্য ও অফিসাররা পেশাদারিত্বের সর্বোচ্চ উদাহরণ রেখেছেন বলে দাবি করেছে দেশটির নিরাপত্তা সূত্র। সরাসরি যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলা, প্রতিরক্ষা কৌশল ও উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন অস্ত্র ব্যবহার ছিল মহড়ার মূল বৈশিষ্ট্য।
সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, “এই মহড়ার মাধ্যমে পাকিস্তান বার্তা দিতে চায়—শত্রুর যেকোনো আগ্রাসনের জবাবে তারা সর্বোচ্চ প্রস্তুত এবং প্রয়োজনে তা চূর্ণ করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।”
মহড়ার সময়-পরিস্থিতি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, সম্প্রতি নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলওসি) কিয়ানি ও মন্ডল সেক্টরে ভারতীয় সেনাদের ‘বিনা উসকানিতে’ গুলিবর্ষণের পাল্টা জবাবে পাকিস্তান একটি ভারতীয় চেকপোস্ট ধ্বংস করার দাবি করেছে। পাক সেনা সূত্র জানায়, ভারতের অধিকৃত কাশ্মীরের চকপুত্র পোস্টসহ কয়েকটি বাঙ্কার তারা নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় বহু হতাহতের ঘটনায় ভারত পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করেছে। এর পর থেকেই দিল্লি একের পর এক কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে—পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভিসা বাতিল, কূটনীতিক বহিষ্কার এবং সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিতের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
জবাবে ইসলামাবাদও ভারতের বিরুদ্ধে আকাশ ও স্থলসীমা ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে। এমন উত্তেজনাকর প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এই সামরিক মহড়া পুরো দক্ষিণ এশিয়া জুড়েই উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে, দুই দেশই পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ায় আন্তর্জাতিক মহল সতর্ক নজর রাখছে পরিস্থিতির ওপর।
সাম্প্রতিক এক মন্ত্রিসভা বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেনাবাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়ে যে কোনও পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের অনুমোদন দিয়েছেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।