হোয়াইট হাউসে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ স্বাক্ষর করলেন ট্রাম্প

লালসবুজ ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০১:৪৪ পিএম

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য এই উদযাপন ছিল বহু প্রতীক্ষিত। রিপাবলিকানদের চাপ দিয়ে, বাজেট ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগ সত্ত্বেও, তিনি শুক্রবার (৪ জুলাই) হোয়াইট হাউসের সাউথ লনে একটি বিশাল আয়োজনে এই বিলে স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে ছিল ‘বি-২’ বোমারু বিমানের ফ্লাইওভার—ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সাম্প্রতিক হামলার ইঙ্গিত এবং ন্যাশনাল মলে আতশবাজির প্রদর্শনী।

ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, ‘আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, আর আজ তা রক্ষা করেছি। গণতন্ত্রের জন্মদিনে এটা গণতন্ত্রেরই জয়। যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ খুশি।’

সপ্তাহখানেক আগে তিনি ৪ জুলাইয়ের ডেডলাইন ঠিক করেছিলেন, যা অনেক সমর্থকের কাছেই অতি উচ্চাভিলাষী মনে হয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্পের দলের ওপর তার আয়রন গ্রিপ এবং হোয়াইট হাউসের ভাষায় তার ‘সর্বত্র উপস্থিতি’ রিপাবলিকানদের একত্রিত করেছিল।

এই বিল স্বাক্ষর তার দ্বিতীয় মেয়াদের সবচেয়ে বড় আইনগত জয়। ট্রাম্প কংগ্রেস সদস্যদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, সঙ্গে ছিলেন সামরিক পরিবারবর্গ—যারা স্বাধীনতা দিবসের নিয়মিত অতিথি। তিনি বিলটিকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আইন’ বলে ঘোষণা করেন, যদিও কংগ্রেসনাল বাজেট অফিস (সিবিও) বলছে, এটি ফেডারেল ঘাটতি বাড়াবে ৩.৩ ট্রিলিয়ন ডলার। এতে মেডিকেড ও খাদ্য সহায়তায় কাটছাঁট হবে ১ ট্রিলিয়ন ডলার।

অনেক রিপাবলিকানই আশঙ্কা করছেন, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির কাটছাঁট আগামী নির্বাচনে তাদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সিবিও-এর মতে, ১.২ কোটি আমেরিকান স্বাস্থ্যবিমা হারাতে পারেন।

ডেমোক্র্যাটরা ইতিমধ্যেই অভিযোগ তুলেছে যে ট্রাম্প ধনীদের জন্য ট্যাক্স ছাড় দিয়েছেন, গরিবদের সুবিধা কেড়ে নিয়ে।

ট্রাম্পের সমর্থকরা এখন বিলের সুবিধাগুলো—যেমন টিপসের ওপর ট্যাক্স মওকুফ ও অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে বাজেট বাড়ানো—জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটদের সমালোচনাকে ‘প্রতারণা’ বলে আখ্যায়িত করেন। জনমত জরিপে বিলের জনপ্রিয়তা কম থাকলেও তিনি দাবি করেন, ‘এটি আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় বিল!’

ইতিহাস বলে, মার্কিন প্রেসিডেন্টরা বড় বিল পাস করলেও পরে জনসমর্থন আদায়ে ব্যর্থ হন—যার মূল্য দিতে হয় তাদের দলকে। কিন্তু ট্রাম্পের জন্য এটি শুধুই রাজনৈতিক বিজয় নয়, তার উত্তরাধিকার রচনার প্রশ্ন। তিনি এই বিলকে তার প্রচারাভিযানের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন বলে বর্ণনা করেন।

শুক্রবারের (৪ জুলাই) ‘বি-২’ বোমারু বিমানের ফ্লাইওভার ইরানে সাম্প্রতিক হামলার স্মৃতি জাগিয়ে তোলে। গত দুই সপ্তাহে ট্রাম্পের সাফল্যের ঝুলিতে রয়েছে ন্যাটো-সদস্যদের প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়ানো, সুপ্রিম কোর্টে নির্বাহী ক্ষমতা সম্প্রসারণ, এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা।

স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ট্রাম্প হাউস স্পিকার মাইক জনসন, সিনেট নেতা জন থুন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, এবং অ্যাটর্নি জেনারেল প্যাম বন্ডিকে ধন্যবাদ জানান। ভাইস প্রেসিডেন্ট জে.ডি. ভ্যান্স সাউথ ডাকোটা সফরে থাকলেও, তাকে বিল পাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য কৃতিত্ব দেয়া হয়।