শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ‘গোপন’ বৈঠকের পরিকল্পনা ট্রাম্পের

ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী অক্টোবর মাসে দক্ষিণ কোরিয়া সফরের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যেখানে তিনি সম্ভবত চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে গোপন বৈঠক করতে পারেন।
সিএনএনকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসনের তিনজন শীর্ষ কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে, ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টারা গোপনে দক্ষিণ কোরিয়ার গিয়াংজু শহরে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কোঅপারেশন (অ্যাপেক) বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। এই সম্মেলন অক্টোবরের শেষ থেকে নভেম্বরের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈঠকের ফাঁকে শি জিনপিং ও ট্রাম্পের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক আয়োজন নিয়ে আলোচনা চলছে, তবে এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
গত মাসে এক ফোনকলে শি ট্রাম্প ও তার স্ত্রীকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানান। ট্রাম্পও পাল্টা আমন্ত্রণ দিয়েছেন, যদিও কোনো তারিখ এখনো ঠিক হয়নি।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়া সফরের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যেখানে মূলত অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে।’ এ ছাড়া বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা ও অসামরিক পারমাণবিক সহযোগিতার বিষয়েও আলাপের সুযোগ তৈরি হতে পারে।
এই সফরকে ঘিরে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গেও বৈঠকের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং ট্রাম্পকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোর সময় এমন সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ট্রাম্পও বলেছেন, তিনি কিমের সঙ্গে দেখা করতে প্রস্তুত।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি তা করব এবং আমরা আলাপ করব।
উনি আমার সঙ্গে দেখা করতে চান। আমরা তার সঙ্গে বৈঠকের অপেক্ষায় আছি, আর সম্পর্ককে আরো ভালো করব।’
তবে শি এবং কিম উভয়ের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক এখন সূক্ষ্ম এক পর্যায়ে রয়েছে। সম্প্রতি বেইজিংয়ে শি জিনপিং, কিম জং উন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সঙ্গে নিয়ে সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেন। ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই আয়োজনকে কটাক্ষ করে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, চীন, রাশিয়া ও ভারত যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী ‘ষড়যন্ত্র’ করছে।
অন্যদিকে, মার্কিন-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ নিয়েও উত্তেজনা চলছে। এপ্রিলে ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫% শুল্ক আরোপ করেন, আর চীন পাল্টা যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ১২৫% কর বসায়। পরবর্তীতে নভেম্বর পর্যন্ত বাড়তি শুল্ক কার্যকর না করার সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গিয়াংজু সম্মেলন হবে ট্রাম্প-শি বৈঠকের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ। আর কিম জং উনের উপস্থিতি থাকলে তা হবে আরো তাৎপর্যপূর্ণ।