লালসবুজ২৪.কম
স্বর্ণের দাম বেড়েছে, গয়না ছেড়ে বার-কয়েনের দিকে ঝোঁক বিনিয়োগকারীদের

লালসবুজ ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪২ পিএম

দুবাইয়ে চলতি সপ্তাহান্তে স্বর্ণের বাজারে গরম ভাব বজায় রয়েছে। ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম প্রতি গ্রাম দাঁড়িয়েছে ৩৭১ দিরহামে, যা এপ্রিল ১৬ তারিখে রেকর্ড করা সর্বোচ্চ ৩৭২.২৫ দিরহামের মাত্র ১ দিরহাম কম। অপরদিকে, ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম আবার ছাড়িয়েছে ৪০০ দিরহামের স্তর, যা অনেক সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। খবর গালফ নিউজ

তবে উচ্চমূল্যেও ক্রেতা সংকট নেই, বরং একটি নতুন ক্রেতা শ্রেণি তৈরি হয়েছে, যারা স্বর্ণের গয়নার পরিবর্তে বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিচ্ছেন স্বর্ণের বার ও কয়েন। খরচ বাঁচানো ও ভবিষ্যতের মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনাই তাদের এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ।

মালাবার গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামলাল আহমেদ জানিয়েছেন, ‘যারা আগে শুধুমাত্র গয়না কিনতেন, তারাও এখন সরাসরি বলছেন বার দেখান। এটা আমরা আগে কখনও দেখিনি।’

তার তথ্য অনুযায়ী, মাত্র কয়েক মাস আগেও তাদের ইউএই ভিত্তিক মোট ক্রেতার মধ্যে ৮ শতাংশ স্বর্ণের বার বা কয়েন কিনতেন, এখন সেই সংখ্যা লাফিয়ে ৩০ শতাংশে পৌঁছেছে।

শুধু বিনিয়োগের দিকেই নয়, ব্যবহারিক খরচ কমানোর দিকেও নজর দিচ্ছেন ক্রেতারা। দুবাই গোল্ড সুকে এবং বড় বড় মলে থাকা বেশ কয়েকজন গয়নার ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, ‘গয়নার মেকিং চার্জ অনেক বেশি, এই খরচ বাঁচানোর জন্য অনেকেই সোজা স্বর্ণের বার কিনছেন।’ স্বর্ণের বার পছন্দ করার আরেকটি বড় কারণ হলো সেগুলোর পুনঃবিক্রি বা রিসেল ভ্যালু তুলনামূলকভাবে বেশি এবং ঝামেলাহীন।

এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে ৩ হাজার ৩১৫ ডলার, যদিও সপ্তাহের মাঝামাঝি তা ৩ হাজার ৩৫০ ছুঁয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো যখন একের পর এক স্বর্ণ কিনছে, তখন দাম কমার সম্ভাবনা কম। বরং বছর শেষ নাগাদ এটি ৩ হাজার ৭০০ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শামলাল আহমেদ বলছেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত সেন্ট্রাল ব্যাংকগুলো স্বর্ণ কিনছে, ততক্ষণ বাজারে র‍্যালি চলবে। এটা অনেকের কাছেই এখন একমাত্র নির্ভরযোগ্য নিরাপদ সম্পদ।’

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য ইঙ্গিত দিচ্ছেন, বাজারে এক পর্যায়ে ‘প্রফিট-টেকিং’ শুরু হতে পারে, অর্থাৎ বড় বড় বিনিয়োগকারী লাভের সময় কিছু স্বর্ণ বিক্রি করতে পারেন। তখন দাম সাময়িকভাবে পড়ে যেতে পারে ২ হাজার ৯০০ ডরারে, যা ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির দামের কাছাকাছি। এই সম্ভাব্য পতন সাধারণ ক্রেতাদের জন্য একটি ‘বাইং উইন্ডো’ তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে যারা গয়নার জন্য অপেক্ষা করছেন।

দুবাইয়ের স্বর্ণবাজারে এখন এক ধরনের সচেতনতার সূচনা হয়েছে। যেখানে আগে স্বর্ণ মানেই ছিল গয়না, এখন তা রূপ নিচ্ছে পরিপক্ব বিনিয়োগে। উচ্চমূল্য সত্ত্বেও ক্রেতারা পিছিয়ে নেই, তারা কৌশল বদলাচ্ছেন, বিনিয়োগকেই দিচ্ছেন অগ্রাধিকার।

লালসবুজ২৪.কম
ইমেইল: info@lalsobuj24.com