লালসবুজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ০১:৩৭ পিএম
১৩ বছর আগে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগে সহকারী অধ্যাপক ডা. নারায়ণ চন্দ্র দত্ত (নিতাই) হত্যা মামলায় পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ড ও চার জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ১ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (১৭ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মো. রেজাউল করিমের আদালত আসামিদের উপস্থিততে এই রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ডা. নিতাইয়ের গাড়িচালক কামরুল হাসান অরুণ, বকুল মিয়া, মাসুম মিন্টু ওরফে মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু, মো. হোসেন মিজি ও সাঈদ ব্যাপারী। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হলেন- সাইদুল, মাসুম ওরফে প্যাদা মাসুম, মো. আবুল কালাম ওরফে পিচ্চি কালাম ও ফয়সাল। আমৃত্যুর পাশাপাশি প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
এছাড়া রফিকুল ইসলাম নামে আরেক আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন আদালত। দণ্ডের পাশাপাশি তাকেও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
২০১২ সালের ২৩ অগাস্ট মহাখালী বক্ষব্যাধি হাসপাতালে নিজের বাড়িতে খুন হন ডা. নিতাই। এ ঘটনায় ডা. নিতাইয়ের বাবা তড়িৎ কান্তি দত্ত ওই দিনই বনানী থানায় মামলা করেন।
২০১৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ১০ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক গাজী আতাউর রহমান।
চার্জশিটে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, চুরি করতে গিয়ে তারা ডা. নিতাই চন্দ্রকে হত্যা করেন। মিন্টু, রফিকুল, পিচ্চি কালাম, সাইদুল, প্যাদা মাসুদ, ফয়সাল এই মামলায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ওই বছরের ২২ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। এছাড়াও পাঁচ জন আসামি নিজেদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের ২২ আগস্ট রাত ১১ টার সময় মহাখালী ডা. কোয়ার্টার্সের উপরোক্ত বাসার নিচতলায় ভিকটিমের বাবা-মা এবং দ্বিতীয় তলায় ডা. নারায়ন চন্দ্র দত্ত (নিতাই) ঘুমাতে যায়। ওইদিন ভোর ৩টা ৪৫ মিনিটের দিকে নিতাইতের মা মঞ্জু দত্ত দ্বিতীয় তলায় আওয়াজ শুনতে পায়। নিতাইয়ের মা দ্বিতীয় তলায় উঠে দেখেন তার ছেলের বুকে ও মাথায় রক্তাক্ত আহত অবস্থায় ফ্লোরে পড়ে আছে। নিতাইয়ের মায়ের চিৎকারে প্রতিবেশী ডা. আক্তার হোসেনসহ নিরাপত্তা কর্মীরা এগিয়ে আসে এবং চিকিৎসার জন্য দ্রুত বক্ষব্যাধি হাসপাতালের আইসিইড ইউনিটে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, চুরি করার সময় দেখে ফেলায় ডা. নিতাইকে হত্যা করা হয়। আসামিরা নগদ ৫ লাখ টাকা ও ২টি স্বর্ণের বালা নিয়ে যায়।