লালসবুজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫১ পিএম
নির্বাচনকে সামনে রেখে মোট আট দিন— নির্বাচনের তিন দিন আগে, নির্বাচনের দিন এবং পরবর্তী চার দিন— সেনা মোতায়েন রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশব্যাপী কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আট দিনের জন্য মোতায়েন থাকবে প্রায় এক লাখ সেনা, ব্যবহার করা হবে ড্রোন, প্রয়োগ করা হবে বিচারিক ক্ষমতা, এবং গুজব প্রতিরোধে চালু করা হবে বিশেষ অ্যাপ। এসব কার্যক্রমে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা।
নির্বাচন সামনে রেখে গত ২০ অক্টোবর আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং প্রাসঙ্গিক বিষয়ে মতবিনিময় ও প্রাক প্রস্তুতিমূলক সভায় এ পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে সেনাবাহিনী। নির্বাচন ভবনে সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এ সভায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ বিভিন্ন বাহিনী প্রধান, বিভাগ প্রধান ও প্রতিনিধিরা অংশ নেন। নিয়ম অনুযায়ী সভার কার্যবিবরণী পরবর্তীতে উপস্থিতি ও সংশ্লিষ্টদের পাঠানো হয়।
সভা সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় নির্বাচনে সহিংসতার ঝুঁকি মোকাবেলায় দেশের ৬২টি জেলায় সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে 'ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার'-এর অধীনে মোতায়েন রয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে মোট আট দিন— নির্বাচনের তিন দিন আগে, নির্বাচনের দিন এবং পরবর্তী চার দিন— সেনা মোতায়েন রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ সময় প্রায় ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ সেনা সদস্য মাঠে কাজ করবেন বলে জানানো হয়।
সভায় বলা হয়, কেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই, ভোটার ও কর্মকর্তাদের ওপর হামলা, এমনকি বসতবাড়িতে হামলা বা অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটতে পারে— এমন ঝুঁকি ধরে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য সারা দেশে অস্থায়ী ক্যাম্প বসানো, গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-মহাসড়কে নজরদারি, সংখ্যালঘুপ্রবণ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা এবং বিদেশি সাংবাদিক-পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পৃথক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
নির্বাচনি সরঞ্জাম ও কর্মকর্তা পরিবহনে হেলিপ্যাড প্রস্তুত রাখা, প্রয়োজনে যানবাহন অধিগ্রহণ, সেনাবাহিনীর ড্রোন ব্যবহার, আর্মি এভিয়েশন প্রস্তুত রাখা এবং অঞ্চলভেদে কমান্ডো মোতায়েনের কথাও আলোচনায় উঠে আসে।
সভায় আরও জানানো হয়, সরকার সেনাবাহিনীকে ইতোমধ্যে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়েছে। প্রয়োজনে বিচারিক ক্ষমতা পেলে নির্বাচনে সেনাবাহিনী আরও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারবে। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে সেনাসদস্যদের কেন্দ্রের ভেতরে যাওয়ারও অনুমতি লাগতে পারে।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে বিশেষ অভিযান অব্যাহত রাখার প্রস্তাবও সভায় করা হয়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নির্বাচনি দায়িত্বে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রাখবে বলেও সভায় জানানো হয়।