লালসবুজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৫৩ পিএম
বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেছেন, দেশে বর্তমানে যে অস্থিরতা, সহিংসতা এবং অনিশ্চয়তা চলছে, তাতে "এই দেশে পাগলও থাকতে চাইবে না"।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “৩৬৫ দিনে ৩৭০টা মব লিঞ্চিং হয়েছে। এমন একটা দেশে তো পাগলও বিনিয়োগ করবে না, পাগলও বাস করতে চাইবে না।”
রুমিন বলেন, দেশের সার্বিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে আছে। যারা ইনভেস্ট করতে চান, তারা স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখতে চান, একটি স্থিতিশীল সরকার দেখতে চান। কিন্তু সেটা নেই। তাই দেশ থেকে বিনিয়োগ পালাচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা আসলে "দায়িত্ব পালন নয়, বরং হঠাৎ পাওয়া ক্ষমতা উপভোগ করছেন"। দেশের প্রতি তাঁদের দায়বদ্ধতা নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নেপালের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংকট ও নির্বাচন ঘিরে নেওয়া উদ্যোগের উদাহরণ টেনে রুমিন বলেন, “নেপালে মাত্র তিনজনের মন্ত্রিসভা শপথ নিয়ে বলেছে, তাদের একমাত্র কাজ হচ্ছে নির্বাচন। সেখানে কে দোষী, কে নয় সে খোঁজে না গিয়ে তাঁরা কাজ শুরু করেছে। আর আমরা এখানে নানা টালবাহানায় দিন পার করছি।”
রুমিন ফারহানা আরও বলেন, যারা অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন, তাদের অনেকে বহু বছর আগে দেশ ত্যাগ করেছেন। এখন হঠাৎ করেই তারা "বড় বড় জায়গায় বসে বড় বড় কথা বলছেন", অথচ দেশের বাস্তবতা সম্পর্কে তাদের কোনো সংযোগ নেই।
তিনি বলেন, “এরা এমন কিছু লোক, যাদের নাম আগে কেউ জানত না। কারণ তারা তো অনেক আগেই দেশ ছেড়ে গেছেন। এখন তারা বিদেশিদের সঙ্গে সন্ধ্যায় চা খেয়ে আলোচনা করে বাংলাদেশে মানুষ থাকে কি না, সেটা নিয়েই প্রশ্ন তোলে। অথচ আমরা এখানেই থাকব, এখানেই মরব ইনশাআল্লাহ।”
সরকারি সংস্কার নিয়ে রুমিন বলেন, “নারী কমিশন, চিকিৎসা সংস্কার, পুলিশ সংস্কার, প্রশাসন সংস্কার অনেক কিছু গঠন হয়েছে, পরিকল্পনা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়ন কোথায়? দলগুলো নাকি একমত, অথচ বাস্তবে কিছুই হয়নি।”
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার একটি “বাবল” বা কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে যেখানে জনগণকে বোঝানো হচ্ছে সরকার কাজ করছে। আপনারা কিছু করছেন না। আপনি আসলে পেয়ে না পাওয়া একটা ক্ষমতা উপভোগ করছেন।
দেশে দীর্ঘদিন ধরে চলা ব্রেইন ড্রেইন বা মেধাপাচারের দিকেও দৃষ্টি দেন রুমিন ফারহানা। “গত ৪০ বছরে ভয়াবহ ব্রেইন ড্রেইন হয়েছে। যাদের সামর্থ্য ছিল, তারা সন্তানদের বিদেশে পাঠিয়েছে, তারা সেখানেই সেটেল করেছে। এখন যারা আছেন, তারাও দেশ ছাড়তে চাইছেন। আমি নিজের কাছেই শুনি—বন্ধুবান্ধব, পরিচিতজনদের মধ্যে—তারা দেশ ছাড়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।”