লালসবুজ২৪.কম
ফিলিস্তিনপন্থি সংগঠন নিষিদ্ধে ভোট দিলেন টিউলিপ সিদ্দিক

লালসবুজ ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৫, ০২:৪৯ পিএম

যুক্তরাজ্যের প্রো-প্যালেস্টাইন সংগঠন ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবে ভোট দিয়েছেন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) টিউলিপ সিদ্দিক। গত বুধবার (২ জুলাই) অনুষ্ঠিত সংসদীয় ভোটে প্রস্তাবটি ৩৮৫ ভোটে পাস হয়, যেখানে ২৬ জন এমপি এর বিরোধিতা করেন।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এই সিদ্ধান্তে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনের ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি হয়েছে। মুসলিম এমপিদের মধ্যে টিউলিপসহ কয়েকজন এই নিষেধাজ্ঞার পক্ষে ভোট দিলেও অধিকাংশ মুসলিম এমপি ভোটে অংশ নেননি বলে জানিয়েছে ফাইভ পিলারস।

‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া একটি সরব সংগঠন, যারা ইসরায়েলি অস্ত্রশিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্রিটিশ কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছে। গত মাসে সংগঠনটির কর্মীরা একটি সামরিক ঘাঁটিতে প্রবেশ করে দুটি বিমানে লাল রঙ ছিটিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিল।

এই নিষেধাজ্ঞার ফলে সংগঠনটি এখন আল-কায়েদা ও আইএসের মতো সন্ত্রাসী সংগঠনের আইনি পর্যায়ে স্থান পেয়েছে। এখন থেকে তাদের সমর্থন বা সংশ্লিষ্টতা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

এই পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করেছেন স্বাধীন এমপি জারা সুলতানা, যিনি বলেন, “একটি স্প্রে ক্যানকে আত্মঘাতী বোমার সঙ্গে তুলনা করা শুধু হাস্যকর নয়, বরং এটি আইন বিকৃতির ভয়াবহ দৃষ্টান্ত।”

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইউকের প্রধান সাচা দেশমুখ একে ‘আইনের নজিরবিহীন অপব্যবহার’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “এতে করে সরকার স্বাধীন মতপ্রকাশ দমন, গ্রেপ্তার ও নজরদারি বাড়াতে পারবে।”

এদিকে, জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের নিযুক্ত বিশেষজ্ঞরাও যুক্তরাজ্য সরকারকে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, প্রাণনাশের উদ্দেশ্য ছাড়া সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সেটিকে সন্ত্রাসবাদ হিসেবে গণ্য করা ঠিক নয়।

প্যালেস্টাইন অ্যাকশন এই সিদ্ধান্তকে অন্যায় ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে আখ্যা দিয়ে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। সংগঠনটি ইতিমধ্যে ব্রিস্টলে একটি এলবিট সাইটের প্রবেশপথ অবরোধ করেছে এবং সাফোকের একটি ভবনের ছাদ দখল করে রেখেছে।

অন্যদিকে, ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াভেট কুপার সংসদে বলেন, “সহিংসতা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কোনো স্থান গণতান্ত্রিক সমাজে নেই। জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতেই হবে।”

আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই প্রস্তাবে ভোটদানে অনেক এমপি ‘টেকনিক্যাল বাধ্যবাধকতায়’ পড়েন, কারণ একটির বিপক্ষে ভোট দিলে একইসঙ্গে নিষিদ্ধ হওয়ার তালিকায় থাকা আরও দুটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা যেত না। এ কারণে অনেকেই রাজনৈতিক কৌশলের কারণে প্রস্তাবের পক্ষে থাকতে বাধ্য হন।

লালসবুজ২৪.কম
ইমেইল: info@lalsobuj24.com