লালসবুজ২৪.কম
ইসরায়েল গাজা দখল করতে চাইলে বাধা দেবেন না ট্রাম্প

লালসবুজ ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৫, ০২:০৩ পিএম

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড পুরোপুরি দখলের পরিকল্পনা নিয়ে ইসরায়েল যদি এগোয়, তাহলে তাতে বাধা দেবেন না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মূলত গাজা দখলে নেওয়া বা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত তিনি ইসরায়েলের ওপরই ছেড়ে দিয়েছেন। বুধবার (৬ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এক প্রশ্নের জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, গাজার মানুষের খাবারের বিষয়টি নিয়েই তিনি বেশি মনোযোগী। ইসরায়েল যদি গাজার পুরো এলাকা দখল করে নেয়, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া তাদের ওপরেই ছেড়ে দেন তিনি।

ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “বাকি বিষয়গুলো সম্পর্কে আমি কিছু বলতে পারি না। এটা মূলত ইসরায়েলের ওপর নির্ভর করছে”।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর ইসরায়েলকে বিপুল পরিমাণ সামরিক সহায়তা দিয়ে থাকে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর এই সহায়তা আরও বেড়েছে। ইসরায়েল একের পর এক বাধ্যতামূলক উচ্ছেদের মাধ্যমে গাজার অধিকাংশ এলাকা (৮৬ শতাংশ) সামরিক অঞ্চলে রূপান্তর করেছে। এতে ফিলিস্তিনিরা ছোট ছোট জায়গায় গাদাগাদি করে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।

এ অবস্থায় বাকি যে অল্প জায়গাগুলোতে মানুষ বাস করছেন, সেখানে নতুন করে সামরিক অভিযান চালালে বিপদের মাত্রা আরও বাড়বে। কারণ গাজার বাসিন্দারা ইতোমধ্যেই প্রতিদিন বোমা হামলা ও চরম খাদ্যসংকটে দিন পার করছেন।

এছাড়া নেতানিয়াহুর গাজা দখলের পরিকল্পনা নিয়ে আরও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে সেখানে আটক থাকা বন্দিদের নিরাপত্তা নিয়ে। ধারণা করা হচ্ছে, হামাস ও অন্য ফিলিস্তিনি সংগঠনগুলোর কাছে এখনো বেশ কিছু ইসরায়েলি নাগরিক বন্দি অবস্থায় আছেন।

জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা মিরোস্লাভ ইয়েনচা মঙ্গলবার বলেন, গাজা পুরোপুরি দখলের চেষ্টা “বিপর্যয়কর পরিণতি” ডেকে আনতে পারে। তিনি নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, “আন্তর্জাতিক আইন স্পষ্টভাবে বলছে— গাজা ভবিষ্যতের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। গাজাকে সেভাবেই থাকতে হবে।”

২০০৫ সালে ইসরায়েল গাজা থেকে তাদের সেনা ও বসতি তুলে নেয়। তবে আইনবিদদের মতে, এরপরও গাজা ‘কার্যত দখলাধীন’ হিসেবেই থেকে যায়, কারণ ইসরায়েল তখনও এর আকাশপথ, পানিসীমা ও প্রবেশপথ নিয়ন্ত্রণ করত।

এদিকে ২০২৩ সালের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে কট্টর উগ্রডানপন্থি ইসরায়েলি নেতারা গাজায় আবারও সেনা মোতায়েন ও বসতি গড়ার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। নেতানিয়াহুও বেশ কয়েকবার বলেছেন, গাজা থেকে সব ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে ফেলা হবে— যা জাতিগত নির্মূলের শামিল।

এমন পরিকল্পনার পক্ষে ট্রাম্পও ফেব্রুয়ারিতে সায় দিয়েছিলেন। তখন ট্রাম্প বলেছিলেন, গাজা ফাঁকা করে সেখানে “মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা” তৈরি করা যেতে পারে।

মঙ্গলবার ট্রাম্প দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজায় ৬ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে। তার প্রশাসন এর মধ্যে জিএইচএফকে ৩ কোটি ডলার দিয়েছে। তিনি বলেন, “আপনারা জানেন, যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক সময়ে গাজায় খাবারের জন্য ৬০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে— খুব বেশি পরিমাণ খাবার, স্পষ্ট করে বললে। কারণ গাজার মানুষ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না, খাদ্যের দিক থেকে খুব খারাপ অবস্থায় আছে।”

তিনি আরও জানান, ইসরায়েল এই খাবার বিতরণে সহযোগিতা করবে বলে তিনি আশা করছেন এবং আরব দেশগুলোও তহবিল ও বিতরণে সহায়তা করবে।

লালসবুজ২৪.কম
ইমেইল: info@lalsobuj24.com