ভারতের ওপর আরও শুল্কের হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের

ছয় বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বৈঠক করতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আলাস্কার অ্যাঙ্কোরেজে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও রাশিয়ার পুতিনের শান্তি আলোচনায় যদি ফলাফল ভালো না হয়, তাহলে ভারতকে আরও শুল্ক দিতে হতে পারে। খবর বিবিসি
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সচিব স্কট বেসেন্ট বলেছেন, ‘রাশিয়ান তেল কেনার জন্য ভারত ইতিমধ্যেই শুল্ক পাচ্ছে। পরিস্থিতি খারাপ হলে এই শুল্ক আরও বাড়তে পারে।’
এর আগে চলতি মাসে ট্রাম্প ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন, যা বিদ্যমান ২৫ শতাংশ শুল্কের সঙ্গে যোগ হওয়ায় মোট শুল্কের হার দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের তেলের মধ্যে রাশিয়ান তেলের অংশ ২০২১ সালে ৩ শতাংশ থাকলেও ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫-৪০ শতাংশে। দিল্লি জানিয়েছে, দরিদ্র জনগণকে সস্তা জ্বালানি দিতে তাদের কাছে বিকল্প নেই।
ট্রাম্পের নতুন ৫০ শতাংশ শুল্ক ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। এতে ভারতের রপ্তানি শিল্প, যেমন টেক্সটাইল ও জুয়েলারিতে প্রভাব পড়তে পারে এবং দেশের বৃদ্ধি প্রায় অর্ধ শতাংশ কমতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য আলোচনাও প্রভাবিত হয়েছে। মার্কিন দল ২৫ আগস্ট ভারতের সঙ্গে আলোচনা পুনরায় শুরু করবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার ফক্স বিজনেসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট ভারতের বাণিজ্য আলোচনায় আচরণকে ‘কিছুটা অনমনীয়’ বলে উল্লেখ করেন।
ট্রাম্পের দাবি, তার শুল্কনীতি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি চাঙা করা এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে ন্যায্যতা আনার পরিকল্পনার অংশ। তিনি বহুবার ভারতকে ‘শুল্ক অপব্যবহারকারী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে তিনি আগ্রহী।
দিল্লি-ওয়াশিংটনের মধ্যে কয়েক মাস ধরে বাণিজ্য আলোচনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা দিল্লিতে পৌঁছানোর পর আগামী ২৫ আগস্ট নতুন করে আলোচনায় বসবে দুই পক্ষ। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, কৃষি ও দুগ্ধপণ্যের ওপর শুল্ক কমাতে ভারতের অনীহা এই আলোচনায় বড় বাধা।
এদিকে ট্রাম্প ঘোষিত ভারতের ওপর নতুন ৫০ শতাংশ শুল্ক আগামী ২৭ আগস্ট কার্যকর হবে, যা অনেক বিশেষজ্ঞের মতে দুই দেশের বাণিজ্যে কার্যত নিষেধাজ্ঞার সমান। এ শুল্কভার ভারতকে এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি করযুক্ত বাণিজ্য অংশীদারে পরিণত করবে। এর ফলে ভারতের টেক্সটাইল ও গয়নাসহ রপ্তানিমুখী শিল্পে বড় ধাক্কা দেবে এবং ভারতের প্রবৃদ্ধি অর্ধ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে।