খেলাপি ঋণ ৬ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে

লালসবুজ ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৮ পিএম

আরও প্রকট হয়েছে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের ভয়াবহ চাপ। মাত্র এক বছরে ৩ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ বেড়েছে। গত বছরের একই সময়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা, যা ছিল মোট ঋণের ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে এ তথ্য।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট ঋণ বিতরণ হয়েছে ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

চলতি বছরের জুনে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ৮ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা। মোট বিতরণকৃত ঋণের ৩৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। তারও আগে মার্চে খেলাপির হার ছিল ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ।

খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, বাংলাদেশ ব্যাংক সাম্প্রতিক সময়ে নজরদারি ও নিয়মকানুন কঠোরভাবে প্রয়োগ করায় ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের প্রকৃত অবস্থা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আগে যেসব ঋণ পরিশোধ না হওয়া সত্ত্বেও কাগজে ‘নিয়মিত’ হিসেবে দেখানো হতো, সেগুলো এখন মন্দ ঋণ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রভাব ও সুবিধার মাধ্যমে বিতরণ করা ঝুঁকিপূর্ণ ঋণগুলো একে একে প্রকাশ পাচ্ছে, আর মন্দ ঋণের পরিমাণও বাড়ছে।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে যে অর্থ বের করে নেওয়া হয়েছে, নিয়মনীতি স‌ঠিক প‌রিপালনের কারণে এখন তা খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হতে শুরু করেছে। ফলে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে ঋণের ৫০ শতাংশের মতো খেলাপি।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে, তখন মোট খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। এরপর থেকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলছে। অর্থনীতিবিদরা অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করছেন, তৎকালীন সরকারের ছত্রছায়ায় ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাট হয়েছে, যার একটা বড়ো অংশই বিদেশে পাচার হয়েছে।