বিজিবির মানবিক ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে পাহাড়

দুর্গম পাহাড়ে এক ফোঁটা সুপেয় পানির জন্য প্রতিদিনের লড়াই। ঝিরির পানি টেনে আনতে হয় ঘণ্টা ধরে হেঁটে। সেই কষ্ট যেন নিত্যদিনের বাস্তবতা। আর ঠিক এই বাস্তবতার মাঝেই আশার আলো হয়ে হাজির হলো বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)।
রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার গভীর পাহাড়ঘেরা দোপানীছড়া পাড়ার মানুষের জন্য সুপেয় পানি পৌঁছে দিতে বিজিবির রুমা ব্যাটালিয়ন (৯ বিজিবি) বিতরণ করেছে ১০০০ ফুট পানির পাইপ। এই কার্যক্রম পাহাড়ি জনপদের জনজীবনে নিয়ে এসেছে স্বস্তি, আস্থা আর এক নতুন ভোরের প্রতিশ্রুতি।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দোপানীছড়া বিওপির তত্ত্বাবধানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিওপি কমান্ডার ক্যাপ্টেন সামীন আবিদ শান্ত স্থানীয় কারবারীর হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পাইপ হস্তান্তর করেন। উপস্থিত ছিলেন বিজিবির কর্মকর্তা, সৈনিক এবং স্থানীয়রা।
বিজিবির ব্যাটালিয়ন সদর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরের এই পাড়াটিতে দীর্ঘদিন ধরেই ছিল সুপেয় পানির তীব্র সংকট। পাহাড়ি ঢাল বেয়ে ঝিরি থেকে পানি সংগ্রহ ছিল তাদের নিত্যদিনের সংগ্রাম।
গত ২২ জানুয়ারি বান্দরবান সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মাহমুদুল হাসান দোপানীছড়া বিওপি পরিদর্শনে যান, স্থানীয়রা তাদের পানির সংকটের কথা তুলে ধরেন। কারবারী সরাসরি ১০০০ ফুট পাইপ সরবরাহের অনুরোধ জানান। সেক্টর কমান্ডার মানবিক আবেদনটিকে গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেন এবং পাইপ সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেন।
বিজিবির এই উদ্যোগকে এলাকাবাসী কেবল একটি সহায়তা নয়, বরং একটি পরিবর্তনের সূচনা হিসেবে দেখছেন। পাইপের মাধ্যমে ঝিরির পানি এখন সরাসরি গ্রামে পৌঁছাবে, যা শুধু কষ্ট লাঘবই করবে না, স্বাস্থ্যঝুঁকি হ্রাস এবং সময় সাশ্রয়ে বড় ভূমিকা রাখবে।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, বিজিবির এ উদ্যোগ আমাদের বাঁচিয়ে দিলো। এখন আর সকালে পাহাড় বেয়ে ঝিরিতে নামতে হবে না।
সীমান্ত রক্ষা নয়, মানুষের হৃদয়ে পৌঁছানোই বিজিবির প্রকৃত শক্তি। দোপানীছড়ার এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল—বিজিবি কেবল নিরাপত্তার প্রতীক নয়, বরং প্রত্যন্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো এক মানবিক বাহিনী।