রৌমারীর বড়াইবাড়ি সীমান্তে উত্তেজনা: পুশ-ইনের চেষ্টা, বিএসএফের গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ

লালসবুজ ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫, ০৪:৫২ পিএম

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ি সীমান্তে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ মে) ভোররাতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১৪ জন ভারতীয় নারী-পুরুষকে অবৈধভাবে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এই পুশ-ইন ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়।

স্থানীয় সূত্র ও সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, রৌমারী সদর ইউনিয়নের বড়াইবাড়ি সীমান্তের আন্তর্জাতিক মেইন পিলার ১০৬৭ এর ১ সাব এলাকায় ভারতের আসাম রাজ্যের মানকারচর থানার কাকরিপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা সীমান্ত গেট খুলে ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দেয়। তবে সীমান্তে টহলরত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা তৎপর হয়ে ওইসব ব্যক্তিদের শূন্যরেখায় নিয়ে যান।

এ সময় ভারতীয় বিএসএফ সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে বিজিবিকে লক্ষ্য করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করে এবং চার রাউন্ড গুলি ছোড়ে। পরে বিজিবির সদস্যরা সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থান নেন। এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় গ্রামবাসীও বিজিবির পাশে দাঁড়িয়ে সীমান্তে অবস্থান নেন। বড়াইবাড়ি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আঞ্জু মিয়া এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এছাড়াও, একই দিন ওই সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ সদস্যদের ছোড়া একটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। হঠাৎ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা, সৃষ্টি হয় চরম আতঙ্কের। গ্রামবাসীরা জানায়, এমন বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দে নারী-শিশু থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। কেউ কেউ আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যান।

স্থানীয় বাসিন্দা ইউনুস আলী, রানা পারভেজ, ফারুক ও সাইদুর রহমানসহ অনেকে জানান, বিএসএফ ভোরে কাঁটাতারের গেট খুলে ওই ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দিতে চেয়েছিল। বিজিবি বাধা দিলে বিএসএফ ক্ষিপ্ত হয়ে গুলি চালায় এবং এখনো সীমান্তের ওপারে প্রচুর ভারতীয় জওয়ান অবস্থান করছে।

এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশের সীমান্তে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সীমান্তে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করেছে বিজিবি। পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিজিবির একটি সূত্র।

এদিকে বিশ্লেষক ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনার ফলে সীমান্তের স্থিতিশীলতা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও প্রভাব পড়তে পারে। স্থানীয় জনগণ নিরাপত্তা জোরদার এবং সঠিক কূটনৈতিক পদক্ষেপের মাধ্যমে বিষয়টির স্থায়ী সমাধান চাচ্ছেন।