মোবাইল সিমের বিষয়ে বিটিআরসির নতুন সিদ্ধান্ত

একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ১০টি মোবাইল সিম ব্যবহার করতে পারবেন এমন নিয়ম চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। নতুন এই নির্দেশনা আগামী ১৫ আগস্ট ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে। বর্তমানে যাদের নামে ১০টির বেশি সিম রয়েছে, তাদের অতিরিক্ত সিম ধাপে ধাপে নিষ্ক্রিয় করে দেয়া হবে। ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে বিটিআরসি মোবাইল অপারেটরসহ সংশ্লিষ্টদের এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত নির্দেশনা পাঠাবে।
এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বিটিআরসির গত ৩০ জুনের নিয়মিত কমিশন বৈঠকে। কমিশনের হিসাবে দেখা গেছে, নতুন সীমা কার্যকর হলে প্রায় ২৬ লাখ গ্রাহকের নামে থাকা ৬৭ লাখ অতিরিক্ত সিম বন্ধ করতে হবে। বিটিআরসি মোবাইল অপারেটরদের একটি তালিকা দেবে, যাতে দেখা যাবে কার নামে কতটি সিম আছে। যাদের নামে ১০টির বেশি সিম রয়েছে, অপারেটররা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জেনে নেবে কোন ১০টি সিম সক্রিয় রাখা হবে। বেশি ব্যবহৃত সিম এবং যেসব নম্বর মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় যুক্ত, সেগুলোকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
এর আগে, ২০১৭ সালে একজন গ্রাহকের জন্য সর্বোচ্চ ১৫টি সিম ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। ২০২২ সালে সিম নিবন্ধন পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন এলেও সিমের সংখ্যা অপরিবর্তিত ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে জালিয়াতি, প্রতারণা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে মোবাইল সিম ব্যবহারের হার বেড়ে যাওয়ায় বিটিআরসি নতুন এই সিদ্ধান্ত নেয়।
আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক বৈঠকে উঠে আসে, অতিরিক্ত সিম ব্যবহার করে কিছু ব্যক্তি চাঁদাবাজি, ব্ল্যাকমেইল ও জালিয়াতি করছে। এমনকি সরকারি কর্মকর্তাদের নম্বর ক্লোন করে প্রতারণার ঘটনাও ঘটছে। এসব কারণে সীমা কমানোর সিদ্ধান্তে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ২০২৫ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত বিটিআরসির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে ১৮ কোটি ৬২ লাখ সক্রিয় সিম রয়েছে। তবে প্রকৃত গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৬ কোটি ৭৫ লাখ। এদের মধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি গ্রাহক ৫টির কম সিম ব্যবহার করেন। ৬ থেকে ১০টি সিম আছে ১৬ শতাংশের, আর ১১টির বেশি সিম ব্যবহার করেন মাত্র ৩ শতাংশ গ্রাহক।
নতুন সীমা বাস্তবায়নের জন্য মোবাইল অপারেটরদের মাধ্যমে গ্রাহকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রচার কার্যক্রম চালানোর নির্দেশও দেয়া হয়েছে। সিম নিষ্ক্রিয় করার আগে গ্রাহকদের মতামত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।