মিয়ানমারের ‘বিরল খনিজে’ নজর ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র

মিয়ানমারের কাচিন অঞ্চলে থাকা বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ ‘বিরল খনিজ’ বা রেয়ার আর্থ মিনারেলস-এর মজুদের ওপর নজর ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র। চীনের ওপর থেকে খনিজ নির্ভরতা কমাতে এবার এই অঞ্চল নিয়ে কৌশলগতভাবে ভাবছে ট্রাম্প প্রশাসন। কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি (KIA) নিয়ন্ত্রিত এলাকাতেই রয়েছে এই দুর্লভ খনিজ সম্পদের মূল ভান্ডার। খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
হোয়াইট হাউসে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে কাচিন অঞ্চলের খনিজ সম্পদ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে অংশ নেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের কার্যালয়ের প্রতিনিধিরা, যারা নিরাপত্তা ও বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন।
সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের অভ্যন্তরে বর্তমানে দুটি মত স্পষ্টভাবে বিরাজ করছে। একদল মনে করছে, সামরিক সরকারের (জান্তা) সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কাচিন বিদ্রোহীদের (KIA) সঙ্গে শান্তিচুক্তি করিয়ে খনিজ উত্তোলনের পথ সুগম করা উচিত। অপরপক্ষ বলছে, জান্তার সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে সরাসরি বিদ্রোহী কাচিন বাহিনীর সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাচিন অঞ্চলে যে বিরল খনিজ রয়েছে, তা যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, রাডারসহ উচ্চ প্রযুক্তির সামরিক সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। বিশ্ব বাজারে এ খনিজের ওপর চীনের একচেটিয়া প্রভাব রয়েছে। তাই কাচিন খনিজ ক্ষেত্রকে কাজে লাগাতে পারলে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য তা হবে কৌশলগত বিজয়।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা যুক্তরাষ্ট্রকে পরামর্শ দিয়েছেন, চাইলে তারা মধ্যস্থতা করে একটি আঞ্চলিক শান্তিচুক্তি করতে পারে—যা কাচিন অঞ্চলে খনিজ উত্তোলন ও রপ্তানির পথ খুলে দেবে।
তবে হোয়াইট হাউস এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অবস্থান নেয়নি। মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মিয়ানমার বিষয়ে এখনো নীতিগত পর্যালোচনা চলছে। জান্তা সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার কোনো তৎপরতা আপাতত নেই বলেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দীর্ঘদিনের যুক্তরাষ্ট্র-মিয়ানমার কূটনৈতিক নীতিতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা যাবে, যা শুধু অর্থনৈতিক নয় বরং ভূরাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।