ঘন ও কালো চুল পেতে চান? উপকার মিলবে এই দুই উপাদানে

লালসবুজ ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ০৪:০৫ পিএম

আজও সৌন্দর্যের অন্যতম মাপকাঠি বলে মনে করা হয় ঘন ও কালো চুলকে। বাজারে পাওয়া নানা পণ্য ব্যবহারে যদিও অনেক সময় মনের মতো চুল পাওয়া যায়, তবে আপনি চাইলে রান্নাঘরে থাকা দুই উপাদানেই উপকার পেতে পারেন। আর সেগুলো হচ্ছে আমলকী ও কারিপাতা। চুলের যত্নে এই দুই উপাদানের গুরুত্ব খুব একটা কম নয়।

আমলকী ও কারি পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও খনিজ পদার্থ থাকে, যা আপনার মাথার ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এই পুষ্টি উপাদানগুলো রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে এবং চুলকে গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কিভাবে এই উপাদানগুলো চুলের স্বাস্থ্যের জন্য সাহায্য করে।

আমলকী

আমলকিতে বেশিরভাগ সাইট্রাস ফলের তুলনায় বেশি ভিটামিন সি থাকে এবং এটি কোলাজেন তৈরির জন্য চমৎকার একটি উৎস।

কোলাজেন হলো একটি প্রোটিন, যা আপনার চুলের শক্তি ও স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে।

আয়রন সমৃদ্ধ বৈশিষ্ট্যের কারণে আমলকী আপনার চুলের গোড়ার চারপাশে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আপনার মাথার ত্বকে আরো বেশি অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছনোর অর্থ হলো স্বাস্থ্যকর রুট এবং দ্রুত চুলের বৃদ্ধি।

আমলকী মেলানিন উৎপাদনে সহায়তা করে বলে জানা যায়, যা আপনাকে এর প্রাকৃতিক রঞ্জক পদার্থ প্রদান করে।

নিয়মিত আমলকী সেবন চুল পাকা রোধ করতে এবং এটিকে প্রাকৃতিকভাবে কালো রাখতে সাহায্য করতে পারে। আমলকিতে প্রদাহ-বিরোধী এবং শীতলকারী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা চুলকানি, খুশকি এবং মাথার ত্বকের সাধারণ জ্বালাপোড়া মোকাবেলায় সাহায্য করে।
আমলকী ফ্ল্যাভোনয়েড ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা আপনার চুলের কোষগুলোকে প্রতিদিনের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। নিয়মিত আমলকী খেলে আরো শক্তিশালী ও চকচকে চুল পেতে পারেন।

কারি পাতা

কারি পাতায় প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন ও অ্যামিনো এসিড থাকে, যা চুল পড়া রোধ করতে এবং সামগ্রিক চুলের ঘনত্ব ভালো করতে গুরুত্বপূর্ণ। 

চুল ক্যারোটিন দিয়ে তৈরি, যা এক ধরনের প্রোটিন। কারি পাতা আপনার শরীরকে প্রয়োজনীয় প্রোটিন ও এনজাইম সরবরাহ করে ক্যারোটিন উৎপাদনে সহায়তা করে, যা চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে।
চুলে মেলানিন পুনরুদ্ধার করতে কারি পাতা ব্যবহার করা হয়। তাই আপনার খাদ্যতালিকায় এগুলো অন্তর্ভুক্ত করলে অকালে চুল পেকে যাওয়ার প্রবণতা কমবে এবং আপনিও মনের মতো ঘন চুল পাবেন।

কারি পাতায় থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিফাঙ্গাল যৌগগুলো টক্সিন বের করে দিতে এবং জমে থাকা রোধ করতে সাহায্য করে, যা আপনার মাথার ত্বককে সতেজ রাখে। এ ছাড়া কারি পাতায় থাকা ভিটামিন এ, বি, সি এবং ই থাকে। এগুলো খেলে সময়ের সঙ্গে আপনার চুলের গঠন উন্নত হতে পারে। নিয়মিত সেবন করলে, এটি অল্প সময়ের মধ্যেই আপনার চুল মসৃণ ও রেশমি করে তুলবে।

কিভাবে ব্যবহার করবেন

আপনার খাদ্যতালিকায় আমলকী ও কারি পাতা যোগ করার একটি সহজ উপায় হলো তাজা কারি পাতা, কুঁচি করা আমলকী, নারকেল, কাঁচা মরিচ ও লেবু দিয়ে দ্রুত চাটনি তৈরি করা। এটি দোসা, ইডলি, এমনকি রুটির সঙ্গেও দারুণ খেতে লাগে।

ডাল বা তরকারিতে কারি পাতা বা কুঁচি করা আমলকী যোগ করতে পারেন। আমলকী ও কারি পাতা কুঁচি করে পানিতে হলুদ ও আদা মিশিয়ে সিদ্ধ করুন। সকালে ও ঘুমানোর আগে এই ভেষজ পানীয়টি পান করুন। এটি প্রশান্তিদায়ক, শরীরে টক্সিন জমা হতে দেয় না এবং আপনার চুল এবং হজমের জন্য দুর্দান্ত। সকালের স্মুদিতে কলা, পালং শাক ও তিসির বীজের সঙ্গেও এক টুকরো আমলকী ও কয়েকটি কারি পাতা যোগ করতে পারেন।