ছোটপর্দার অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা, এখন বড়পর্দারও অভিনেত্রী। তার সরব উপস্থিতি রয়েছে। আবার লেখালেখি ও নাচেও পারদর্শী তিনি। মাঝেমধ্যে ছবিও আঁকেন দারুণ। সম্প্রতি দুটি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন এ অভিনেত্রী। সিনেমা ও সমসাময়িক নানা বিষয়ে নিয়ে যুগান্তরের এক সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন আশনা হাবিব ভাবনা।
যুগান্তর: নতুন দুই সিনেমায় যুক্ত হয়েছেন। কবে নাগাদ শুটিং শুরু করবেন?
আশনা হাবিব ভাবনা: নতুন দুই সিনেমার মধ্যে হিমু আকরাম পরিচালিত ‘আলতাবানু জোছনা দেখেনি’ নিয়ে পরিচালকের সঙ্গে কয়েক মাস আগেই কথা হয়েছিল। এ সিনেমায় কলকাতার স্বস্তিকা মুখার্জিও অভিনয় করছেন। অন্য সিনেমাটিতে কিছুদিন আগে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। এটি নিয়ে এখনই কিছু বলতে পারছি না। তবে সিনেমাটি আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও পরিচালকও আমার খুব পছন্দের। আশা করি এটাও একটি ভালো কাজ হবে। শুটিং শুরু করার আগে বিস্তারিত জানাব।
যুগান্তর: অন্যান্য সিনেমার কাজের কী খবর?
ভাবনা: ‘যাপিত জীবন’ নামে একটি সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় আছে। এটি পরিচালনা করেছেন হাবিবুল ইসলাম হাবিব। এ ছাড়া রাইসুল ইসলাম অনিকের ‘চারুলতা’র শুটিং করেছিলাম দুই-তিন দিন। পুরো কাজই বাকি আছে। ডিসেম্বরের শুরুতে জাফর ফিরোজ পরিচালিত ‘জেনুবিয়া’র শুটিং শুরু হবে মালয়েশিয়াতে।
যুগান্তর: রঙতুলি নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। শখের বশে নাকি কোনো উদ্দেশ্য ছিল?
ভাবনা: ছাত্র আন্দোলনের পরের ঘটনা এটি। আমি মূলত প্রতিবাদ জানাতেই রাস্তায় নেমেছিলাম। আমি একজন চিত্রশিল্পীও। তাই আমার মতো করে প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমি শহিদ আবু সাঈদের একটি ছবি এঁকেছিলাম। যে ঘটনা আমাকে নাড়া দেয়, সেটা নিয়ে অবশ্যই কথা বলার চেষ্টা করি। আমার প্রথম কবিতার বইয়ের নাম হচ্ছে— ‘রাস্তার ধারে গাছটার কোনো ধর্ম ছিল না’। এটাও কিন্তু আমার একটা প্রতিবাদ। আমি বিষয়গুলোকে এভাবেই দেখতে পছন্দ করি।
যুগান্তর: কাজ করতে গিয়ে কোনো বাধা এসেছে কখনো?
ভাবনা: ‘ভয়ংকর সুন্দর’ সিনেমার পর থেকে নিয়মিত কাজ করছি, অর্থাৎ ৭ বছর ধরে। এর মধ্যে অনেক প্রতিকূল অবস্থারই মুখোমুখি হয়েছি। পুরো ক্যারিয়ারে কত প্রতিকূলতার মধ্যেই তো থাকতে হয়েছে আমাকে। এখন আমি চাইলে ফেসবুকে লিখতে পারি যে, এটা হয়েছিল বা ওটা হয়েছিল। কিন্তু আমি এ রকম একজন মানুষ, যে কিনা আমার অসহায়ত্বের কথা কারও সঙ্গে বলব না। এটা আমার সিদ্ধান্ত। এখন কেউ যদি আমাকে কোনো কাজ থেকে বাদ দিয়ে দিল, এখন সেটা নিয়ে যদি লিখি, তাহলে অনেক মানুষ হয়তো সোশ্যালে এটা-ওটা বলবে যে, ‘আহারে উনার সঙ্গে অন্যায় হয়েছে।’ এ রকম অনেক কিছুই হয়তো বলবে, কিন্তু আমি এটা চাই না। এটাই আমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। আমি আমার দর্শকদের, আমার ভালোবাসার মানুষদের পজিটিভ তথ্য দিতে চাই। কখনই অসহায়ত্বের গল্প বলতে চাই না।
যুগান্তর: অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আপনার চাওয়া কী?
ভাবনা: নতুন সরকারের কাছে এটুকুই চাই যেন আমরা ভালো থাকতে পারি। নিরপেক্ষতা চাই, স্বচ্ছতা চাই, জবাবদিহি চাই, আইনের সুশাসন চাই আর যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেগুলোর বিচার দেখতে চাই। যে বা যারা আবু সাঈদসহ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে গুলি করে মারল, সেটার বিচার যেন আমরা স্বচ্ছতার সঙ্গে দেখতে পারি। আমি সাধারণ মানুষ, এর থেকে বেশি কিছু আর কী চাইব।