সিরিয়ার নতুন শাসক অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন। বাশার আল-আসাদের পতনের সপ্তাহ দুয়েক পর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার চেষ্টার অংশ হিসেবে বিদ্রোহীরা এই উদ্যোগ নিলো। ক্ষমতাসীন জেনারেল কমান্ড শনিবার সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আসাদ হাসান আল-সিবানির নাম ঘোষণা করেছে। খবর আল জাজিরার।
নতুন প্রশাসনের একটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছে, শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় সিরিয়ার জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সরকারি সূত্রের বরাতে রয়টার্স বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পদে মুরহাফ আবু কাসরা নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) জ্যেষ্ঠ নেতা। এই গোষ্ঠীর নেতৃত্বে বিদ্রোহীদের জোট হয়েছে। আর তাদের হাতে স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের পতন হয়।
দামেস্ক থেকে আল-জাজিরার সংবাদদাতা রেসুল সেরদার বলেছেন, মুরহাফ আবু কাসরা ও আসাদ হাসান আল-সিবানি বিদ্রোহী গোষ্ঠী এইচটিএসের প্রধান আহমেদ হুসাইন আল-শারার ‘অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত। তাদের নিয়োগের কারণে প্রশ্ন উঠেছে, এইচটিএস সিরিয়ার সরকার গড়েছে, নাকি তাদের নিজস্ব সরকার গঠন করেছে।
এই সংবাদদাতা জানান, ‘সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারে নবগঠিত ১৪ জনের নতুন মন্ত্রিসভার সবাই আহমেদ হুসাইন আল-শারার ঘনিষ্ঠ সহযোগী কিংবা বন্ধু।’ আসাদ সরকার পতনের পর সিরিয়ার শাসনভার এখন কার্যত এইচটিএসের প্রধান আহমেদ হুসাইন আল-শারার হাতে। তাকে দেশটির ‘ডি ফ্যাক্টো’ শাসক বলা হচ্ছে। বাশার আল-আসাদের পলায়ন ও ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তিনি বিদেশি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে সরাসরি যুক্ত আছেন। সম্প্রতি দেশটিতে জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল ও যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকদের স্বাগত জানিয়েছেন এই নেতা।
আল-শারা বলেছেন, দেশ পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জন করা প্রাথমিকভাবে তার মনোযোগের কেন্দ্রে থাকবে। নতুন করে কোনো সংঘাতে জড়ানোর আগ্রহ তার নেই।
প্রসঙ্গত, বিদ্রোহী যোদ্ধারা ৮ ডিসেম্বর রাজধানী দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নেয়। পালিয়ে যান ২৪ বছর ধরে সিরিয়া শাসন করা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। এর মধ্যে সর্বশেষ ১৩ বছর সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলেছে। আসাদের পতনের মধ্য দিয়ে দেশটিতে আল-আসাদ পরিবারের টানা ৫৩ বছরের শাসনামলের অবসান ঘটে।