স্মরণকালের ভয়াবহতম বন্যায় কবলিত দেশ। ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খাগড়াছড়িসহ আশপাশের জেলাগুলো প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে আছে অর্ধকোটির বেশি মানুষ। এই মানবিক বিপর্যয়ে বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।
সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন দেশের চলচ্চিত্রশিল্পী, অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও। ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নাটকের কাবিলা খ্যাত অভিনেতা জিয়াউল হক পলাশও আছেন এই তালিকায়। রান্না করে হাজারও মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন এই অভিনেতা।
‘ডাকবাক্স’ নামে একটি ফাউন্ডেশন রয়েছে পলাশের।
যখনই প্রয়োজন পড়ে সারাদেশের ভলান্টিয়ারের মাধ্যমে তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। অনেকটা নীরবে-নিভৃতে কাজ করছে পলাশের এ ফাউন্ডেশনটি। বন্যাদুর্গত এলাকায় পলাশের ডাকবক্সের ২৭ জন ভলান্টিয়ার কাজ করছেন।
রবিবার (২৫ আগস্ট) একটি সংবাদমাধ্যমে পলাশ বলেন, ‘সবাই শুকনো খাবার ত্রাণ হিসেবে দিচ্ছে।
আমি একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করে পাশে রয়েছি। একটি স্থানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে রান্না করে সেই খাবার আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছি বন্যার্তদের জন্য। হাজারের কাছাকাছি মানুষকে নিজেরা রান্না করে খাইয়েছি। আগামী তিন দিন এভাবে চলবে। এর আগে আমার ভলান্টিয়াররা ফেনীতে ছিল, রবিবার থেকে তারা কাজ করছে নোয়াখালীতে।
বন্যা পরবর্তী কাজ প্রসঙ্গে পলাশ বলেন, ‘বন্যা পরবর্তীতে পুনর্বাসনে সচেতন হওয়া জরুরি। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর সবচেয়ে বেশি রোগবালাই ছড়ায়। নারী-শিশুরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকে। আমার ভাবনা সেদিকেও রয়েছে। বন্যা পরবর্তীতেও আমি ও আমার টিম সক্রিয় থাকব।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বন্যায় আক্রান্ত জেলা ছিল ১১টি। এগুলো হলো ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার। বন্যায় এসব জেলার ৭৩টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৪৫টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা। ১০ লাখ ৪৭ হাজার ২৯টি পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫২ লাখ ৯ হাজার ৭৯৮ জন। মত্যু হয়েছে ২০ জনের। নিখোঁজ রয়েছে দুজন।