হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারকে চেয়ারম্যান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করছে অন্তর্বর্তী সরকার। তিন সদস্যের এ ট্রাইব্যুনালে তার সঙ্গী হচ্ছেন হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী। ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে শেয়ার করে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী লিখেছেন, ‘ট্রাইব্যুনাল ইজ রেডি। এবার আসো খেলা হবে!’
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা ২২মিনিটে দেয়া পোস্টে তিনি আরও লেখেন, ‘খু’নি হাসিনার বানানো আইনে আর তারই বানানো ট্রাইব্যুনালে হাসিনা আর তার দোসরদের বিচার হবে ইনশাআল্লাহ। এই দিনটির দেখার জন্য মহান রবের দরবারে অজস্রবার চোখের পানি ফেলেছি। এখন স্বপ্ন পূরণে এই তো- আর মাত্র কিছুদিনের অপেক্ষা।’
এর আগে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে হাইকোর্ট বিভাগের নবনিযুক্ত বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও দুই জন বিচারক ট্রাইব্যুনালে কাজ করবেন। ট্রাইব্যুনাল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত জুলাই ও আগস্ট মাসে গণহত্যার অভিযোগ জমা পড়েছে। এসব অভিযোগের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এরই অংশ হিসেবে নতুন প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থা গঠিত হয়েছে। বিচারের জন্য আইন সংশোধন ও ভবন মেরামতের কাজও চলমান। এমন পরিস্থিতিতেই ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিয়োগ দেয়া হলো।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুবনাল গঠন করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। এখন ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো দমন পীড়নকে ‘গণহত্যা’ বিবেচনা করে এ আদালতে বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান তিনি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। ট্রাইব্যুনালে এখন পর্যন্ত শেখ হাসিনাসহ তার ৫০ জনের বেশি মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে।
গত বছরের ১৪ আগস্ট একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কারা হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার চার ছেলে। তন্মধ্যে বড় ছেলে রাফিক বিন সাঈদী মারা গেছেন। আরেক ছেলে শামীম সাঈদী ব্যক্তিগত সফরে আমেরিকা আছেন। তার আরেক ছেলে মাসুদ সাঈদী দেশে থাকেন। তিনি পিরোজপুর-১ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপিপ্রার্থী। এবং ছোট ছেলে নাসিম সাঈদী যুক্তরাজ্য প্রবাসী।