বিসিএস প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীর ছেলে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামকে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যা বর্তমানে সারা দেশের আলোচিত ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। গতকাল সোমবার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সিয়ামকে ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
তবে সম্প্রতি মেয়াদোত্তীর্ণ জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন মেসেঞ্জারে সরাসরি মেডিক্যালের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করার তথ্য জাতীয় নানা গণমাধ্যমে উঠে আসে।
সরাসরি মেডিক্যালের প্রশ্ন ফাঁসের মতো গুরুতর একই অপরাধ করলেও স্বপদে বহাল রয়েছেন আকতার। একই অভিযোগে দুই ইউনিটে দুই ধরনের সিদ্ধান্ত দ্বিচারিতা বলে মন্তব্য করেছেন জবি শাখা ছাত্রলীগের পদধারীরা। তারা জবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের প্রশ্ন ফাঁসের বিচার চেয়েছেন।
এদিকে গত ৪ জুলাই জবি সাধারণ সম্পাদকের মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস, টেন্ডার বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ নানা ঘটনা সামনে আসার পর মেয়াদ উত্তীর্ণ জবি শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে তদন্তে কমিটি গঠন করেছে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি।
তদন্তের জন্য দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
তারা হলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহসভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ হীল বারী। তাদের সাত কর্মদিবসের মধ্যে সরেজমিনে একটি তদন্ত প্রতিবেদন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দপ্তর সেলে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে।
এ বিষয়ে জবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রায়হান বলেন, ‘প্রশ্ন ফাঁসের মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম যেহেতু গ্রেপ্তার হয়েছে, তাই তার বিষয়ে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আমাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধেও প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখতে পেয়েছি। এ প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, গঠিত তদন্ত কমিটি সকল ঘটনার একটি সুষ্ঠু তদন্ত করে ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি পরাগ হোসেন বলেন, প্রশ্ন ফাঁস একটি রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ। এই অপরাধ যারাই করুক না কেন, ছাত্রলীগ তার বা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
বাংলাদেশে ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে কেউ অতীতেও পার পায়নি। এখনো পার পাবে না। আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে যদি অপরাধ প্রমাণিত হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
জানা গেছে, প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সদস্য আবেদ হোসেন ও তার ছেলের বাড়ি মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায়। অন্যদিকে আকতার হোসাইনের বাড়ি একই জেলা মাদারীপুরের একই আসনের কালকিনিতে। প্রশ্ন ফাঁস চক্রে তাদের কোনো যোগসূত্র আছে কি না, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
তদন্তের বিষয়ে তাহসান আহমেদ রাসেল বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিভিন্নজনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন কেন্দ্রে জমা দেব।’
এ ব্যাপারে জানতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি।