এমন অনেকেই আছেন যারা প্রতিদিন মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট সেবন করে থাকেন। এতে শরীরের বিভিন্ন ঘাটতি পূরণ হওয়ার পাশাপাশি উপকার হয়ে থাকে বলে বিশ্বাস তাদের। তবে এতেরই একাংশের আবার ধারণা নেই যে, দিনের ঠিক কোন সময় ট্যাবলেট সেবন করা উচিত। ফলে ট্যাবলেট উপকারী হওয়ার পরও পূর্ণ উপকার মিলে না।
মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট মেডিসিন চিকিৎসক ডা. রুদ্রজিৎ পাল। এবার তাহলে তার পরামর্শ অনুযায়ী মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট খাওয়ার সঠিক নিয়ম জেনে নেয়া যাক।
কখন দেয়া হয় মাল্টিভিটামিন: সাধারণ কোনো সার্জারির পর রোগীকে একমাস বা এরও বেশি সময়ের জন্য ভিটামিন ট্যাবলেট দেয়া হয়। আবার বৃদ্ধ বয়সে শরীরের হাল ফেরাতেও অনেক সময় চিকিৎসক ভিটামিন খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়া ছোট শিশুদের নির্দিষ্ট একটি বয়স পর্যন্ত নিয়মিত ভিটামিন খাওয়ার কথা বলা হয়। কারও শরীরে ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি থাকলেও তাকে ভিটামিন সেবনের পরামর্শ দেয়া হয়। এর বাইরে কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুযায়ী ভিটামিন খাওয়ার কথা বলা হয়।
ভিটামিনের কার্যকারীতা: এই ট্যাবলেটের প্রধান কাজ হচ্ছে ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি পূরণ করা। পাশাপাশি ইমিউনিটিকে সক্রিয় করার কাজে দক্ষ। শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো উপকারী উপাদান পৌঁছাতেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে ভিটামিন ট্যাবলেট। এতেও অনেক উপকার মিলে। অন্যান্য অসুখ হওয়ার ঝুঁকিও কমে।
দিনের কোন সময় ভিটামিন খাওয়া উচিত: এ ব্যাপারে ডা. রুদ্রজিৎ পাল বলেন, কোনো ভারী খাবার খাওয়ার পর ভিটামিন খাওয়ার কথা বলা হয়। এ ক্ষেত্রে সকালে বা রাতে খাবার খাওয়ার পর কেউ চাইলে এই ট্যাবলেট খেতে পারেন। এতে উপকার মিলবে। কখনো খালিপেটে ভিটামিনের ট্যাবলেট সেবন করা যাবে না। এতে উপকার তো মিলবেই না, বরং শরীরের আরও ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে। এ জন্য ভিটামিন ট্যাবলেট খাওয়ার আগে ভারী খাবার খাওয়ার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নয়: অনেকেই আছেন যারা নিজ বুদ্ধিতে ভিটামিনের ট্যাবলেট খেয়ে থাকেন। যা একদমই উচিত নয়। এভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া যে কোনো ধরনের ওষুধ সেবনে উপকারের থেকে বরং জটিলতা সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে। ডা. রুদ্রজিৎ পালের ভাষ্য―অন্যান্য ওষুধের মতোই মাল্টিভিটামিনও এক ধরনের ওষুধ। কোনো ওষুধকেই সাধারণভাবে নেয়া ঠিক নয়। এ জন্য ভিটামিন খাওয়ার আগেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া ভালো। তা না হলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কখনোই খাবার বিকল্প নয়: ভিটামিন ট্যাবলেট বা হেলথ ড্রিংকস কখনো কোনো খাবারের বিকল্প হিসেবে সেবন বা খাওয়া যাবে না। এ জাতীয় ওষুধ যতই সেবন করা হোক না কেন, পাশাপাশি নিয়ম করে শাক-সবজি, ফলমূল ও গোটা দানাশস্য খেতে হবে। এতে শরীরের পুষ্টির ঘাটতি দূর হবে।